
ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত দুই দেশ
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক পাল্টাপাল্টি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর যুদ্ধের আশঙ্কা যখন চূড়ান্ত রূপ নিচ্ছিল, তখন শান্তির বার্তা নিয়ে এগিয়ে এলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শনিবার (১০ মে) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল-এ এক পোস্টে তিনি ঘোষণা করেন, মার্কিন মধ্যস্থতায় ভারত ও পাকিস্তান পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।
ট্রাম্প লিখেছেন, “যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ রাত ধরে আলোচনার পর, আমি আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে ভারত ও পাকিস্তান একটি পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। দুর্দান্ত বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের জন্য উভয় দেশকে অভিনন্দন।”
যুদ্ধের প্রেক্ষাপট
উল্লেখ্য, ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযান এবং পাকিস্তানের ‘অপারেশন বুনিয়ান-উন-মারসুস’ পাল্টা হামলা ঘিরে দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষ চরমে পৌঁছায়। পাকিস্তান শুক্রবার রাতে ভারতের অন্তত ১১টি সামরিক স্থাপনায় হামলা চালায়, যা যুদ্ধ পরিস্থিতির আশঙ্কা আরও জোরালো করে তোলে।
কূটনৈতিক চাপ ও হস্তক্ষেপ
এই উত্তেজনার মধ্যে শনিবার সকালে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরের সঙ্গে কথা বলেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি উভয় পক্ষকে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানান এবং ভবিষ্যতে সংঘাত এড়াতে গঠনমূলক আলোচনার জন্য মার্কিন সহায়তার প্রস্তাব দেন।
এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসে, যা আন্তর্জাতিক পরিসরে তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দক্ষিণ এশিয়ার দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে সরাসরি যুদ্ধের আশঙ্কা যে স্তরে পৌঁছেছিল, তাতে যুক্তরাষ্ট্রের দ্রুত ও দৃঢ় হস্তক্ষেপই স্থিতিশীলতার দিকে মোড় দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
ট্রাম্পের ঘোষণার পরপরই জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাও যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানিয়েছে এবং ভবিষ্যতে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে।
বর্তমানে দুই দেশেই সেনা সরানো বা হামলা বন্ধ রাখার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই যুদ্ধবিরতি কতটা টিকে থাকবে, তা নির্ভর করবে ভবিষ্যতের রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও আন্তর্জাতিক কূটনীতির দক্ষতার ওপর।