
বনি ইসরাঈলের এক ব্যক্তি ৯৯ জনকে খুন করে জগতের সর্বশ্রেষ্ঠ আলেম বা জ্ঞানীর সন্ধান করতে করতে খ্রিস্টান একজন পাদরিকে পেলেন। ৯৯ জনকে হত্যার কথা স্বীকার করলেন। তিনি জানতে চাইলেন, এখন তার তাওবার সুযোগ আছে কি? পাদরির থেকে ‘না’ উত্তর পেলেন। লোকটি তখন পাদরিকেও প্রাণে মেরে ফেললেন।
তিনি পাদরিকে হত্যা করে ১০০ খুন পূর্ণ করলেন। অতঃপর আবার শ্রেষ্ঠ আলেমের সন্ধান করায় তাকে একজন আলেমের কথা জানানো হলো। লোকটি সেই আলেমের কাছের ১০০ খুনের কথা স্বীকার করলেন। এখন তার জন্য তাওবার কোনো সুযোগ আছে কি? আলেম বললেন, ‘হ্যাঁ, আছে। তুমি অমুক জায়গায় যাও। সেখানে কিছু লোক আল্লাহর ইবাদত করছে। তুমিও তাদের সঙ্গে ইবাদত করো। আর তোমার দেশে ফিরে যাবে না। কেননা ওটা খারাপ জায়গা।’
লোকটি নির্দেশিত জায়গার দিকে চলতে থাকল। অর্ধেক পথ অতিক্রম করলে তার মৃত্যুর সময় উপস্থিত হলো। সে তার বক্ষদেশ দ্বারা ওই স্থানের দিকে ঘুরল। লোকটির মৃত্যুর পর রহমতের ও আজাবের ফেরেশতাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দিল। রহমতের ফেরেশতা বললেন, নিখাদ তাওবার মাধ্যমে লোকটি আল্লাহর দিকে ফিরেছেন।
অপরদিকে আজাবের ফেরেশতা বললেন, লোকটি কখনো ভালো কাজ করেননি। এমন সময় অন্য এক ফেরেশতা মানুষের রূপ ধারণ করে তাদের কাছে এলে তারা তাকে ব্যাপারটার বিচারক নিযুক্ত করলেন। তিনি বলেন, ‘তোমরা উভয় দিকের জায়গার দূরত্ব মেপে দেখো। যে দিকটি নিকটবর্তী হবে, সে দিকেরই সে অন্তর্ভুক্ত হবে।’
আল্লাহ তাআলা সামনের ভূমিকে মৃত ব্যক্তির নিকটবর্তী হতে এবং পেছনে ফেলে আসা স্থানকে দূরে সরে যেতে আদেশ করলেন। অতঃপর জায়গা পরিমাপের পর যে দিকের উদ্দেশে সে যাত্রা করেছিল, তারা তাকে সেদিকের এক বিঘত পরিমাণ নিকটবর্তী পেল। ফলে তাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হলো এবং রহমতের ফেরেশতা তার জান কবজ করল [আবু সাঈদ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত, বুখারি, হাদিস : ৩৪৭০, মুসলিম, হাদিস : ২৭৬৬)]
তওবা করলে আল্লাহ আমাদের সব পাপ ক্ষমা করে দিবেন। আল্লাহ বলেন, ‘বলো, হে আমার বান্দারা, তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছ আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে নিরাশ হইয়ো না; আল্লাহ সমুদয় পাপ ক্ষমা করে দেবেন। তিনি তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা জুমার, আয়াত ৫৩)
তিনি আরো বলেন, ‘তিনিই তাঁর বান্দাদের তাওবা কবুল করেন ও পাপ মোচন করেন এবং তোমরা যা করো তিনি তা জানেন।’ (সুরা শুরা, আয়াত ২৫)
মূর্খ ব্যক্তি সমস্যায় পড়লে অভিজ্ঞ কোনো আলেমের কাছে গিয়ে সমস্যার সমাধান করে নিতে হবে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যদি তোমরা না জান তাহলে সুস্পষ্ট দলিল-প্রমাণসহ জ্ঞানীদের কাছে জিজ্ঞেস করো।’ (সুরা নাহল, আয়াত : ৪৪)
হাদিসের গল্প, গবেষণা বিভাগ, হাদিস ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ