সম্প্রতি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্য নিয়ে ক্রিস্টিনা কাশতানোভার লেখা কমিক্স বই ‘জারিয়া অব দ্য ডন’-এর জন্য কাশতানোভাকে কপিরাইট দিয়েছিল ইউএস কপিরাইট অফিস। তবে পরে বিষয়টিকে পুনর্বিবেচনা করে অথর হিসেবে আংশিক কপিরাইট প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। শুধু তাকে কমিক্সের বিষয়বস্তু নির্বাচন, সমন্বয়ের কৃতিত্ব দেওয়া হয়েছে।
কাশতানোভার বইটিতে যে বিষয়গুলো নিয়ে আপত্তি ছিল তা মূলত বানানো হয়েছিল ‘মিডজার্নি এআই’ নামের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে। আর সেই ছবিগুলোতেই আপত্তি যুক্তরাষ্ট্রের কপিরাইট অফিসের। যদিও কাশতানোভার আইনজীবীর দাবি করেন, মিডজার্নির আঁকা ছবিতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এরপরেও কপিরাইট অফিস মনে করছে, তা যথেষ্ঠ নয়।
বর্তমান বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে বই লেখার হিড়িক পড়ে গেছে। এর প্রভাব পড়ছে আমাদের দেশেও। সম্প্রতি বাংলাতেও ‘মানবজাতির গ্রহণ’ নামের সাইফাই মিনি কমিক্স বুক লেখা হয়েছে। এটি একজন মানুষ সমন্বয় করলেও লিখেছে চ্যাটজিপিটি। আর এর ছবিগুলো একেছে মিডজার্নি এআই। পাঠক মহলে ও নেটিজেনদের মধ্যে বইটি এরই মধ্যে আলোড়নও তুলেছে।
এ রকম আরও একজন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর লেখক ব্রেট শিকলার। কখনও কল্পনাই করেননি তিনি লেখক হবেন। যখন তিনি চ্যাটজিপিটি সম্পর্কে জানতে পারেন, তখনই বুঝে যান এটা তার জন্য বড় সুযোগ।
এরই মধ্যে ব্রেট শিশুদের জন্য ৩০ পৃষ্ঠার একটি কমিক্স বুক লিখেছেন। অ্যামাজন ডট ইনে স্ব-প্রকাশনা ইউনিটের মাধ্যমে বিক্রির জন্য সরবরাহ করেছেন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তার লেখা বই এখন পাঠক কিনে পড়তে পারবেন।
চ্যাটজিপিটিকে কাজে লাগিয়ে অ্যামাজনে আরও একজন বই প্রকাশকারী এসচিকলার। তিনি জানিয়েছেন, অনেককেই তিনি দেখেছেন, এরই মধ্যে চ্যাটজিপিটি দিয়ে বই লেখাকে ক্যারিয়ার হিসেবে নিয়েছেন।
অ্যামাজন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে ২০০-এর বেশি বই কিন্ডেল স্টোরে প্রকাশিত হয়েছে। যার মূল লেখক হিসেবে নাম দেওয়া হয়েছে চ্যাটজিপিটি। কো-অথর হিসেবে একজন মানুষের নাম দেওয়া হয়েছে।
অনেকেই বিষয়টিকে মজার বিষয় হিসেবেই নিচ্ছেন, কেউ কেউ আবার এর মাধ্যমে অর্থও কামাচ্ছেন। যদিও সত্যিকার লেখক ও আর্টিস্টদের জন্য এটি হুমকি তৈরি করছে বলেও মনে করছেন অনেকে। তবে এ বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের কপিরাইট অফিস কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কৃতিত্ব মানুষকে দিতে রাজি নয়।