
পাকিস্তান আর্মি
সম্প্রতি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘটিত সশস্ত্র সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে উপমহাদেশের পরিস্থিতি। ভারতীয় বিমানবাহিনীর ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর আওতায় পাকিস্তানের অভ্যন্তরে চালানো হামলায় অন্তত ১১ জন পাকিস্তানি সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন এবং আরও ৭৮ জন আহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আইএসপিআর।
মঙ্গলবার (১৩ মে) দেওয়া এক বিবৃতিতে আইএসপিআর জানায়, ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার দায় ইসলামাবাদের ওপর চাপিয়ে গত ৬ ও ৭ মে পাকিস্তানের বিভিন্ন এলাকায় বিমান হামলা চালায় ভারত। এই হামলা ঘিরেই শুরু হয় ক্ষেপণাস্ত্র বিনিময় এবং প্রায় এক সপ্তাহব্যাপী চলতে থাকা সামরিক সংঘাত। শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক হস্তক্ষেপে কার্যকর হয় যুদ্ধবিরতি।
আইএসপিআর জানায়, শুধু সেনাসদস্যরাই নন, ভারতের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৪০ জন বেসামরিক নাগরিকও। নিহতদের মধ্যে সাতজন নারী এবং ১৫ জন শিশু রয়েছে। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১২১ জন সাধারণ মানুষ।
নিহত সেনাসদস্যদের তালিকা:
পাকিস্তান সেনাবাহিনী:
-
নায়েক আবদুর রহমান
-
ল্যান্স নায়েক দিলাওয়ার খান
-
ল্যান্স নায়েক ইকরামুল্লাহ
-
নায়েক ওয়াকার খালিদ
-
সিপাহি মোহাম্মদ আদিল আখতার
-
সিপাহি নিসার
পাকিস্তান বিমানবাহিনী:
-
স্কোয়াড্রন লিডার উসমান ইউসুফ
-
চিফ টেকনিশিয়ান আওরঙ্গজেব
-
সিনিয়র টেকনিশিয়ান নাজিব
-
করপোরাল টেকনিশিয়ান ফারুক
-
সিনিয়র টেকনিশিয়ান মোবাশির
এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও পাল্টা সামরিক অভিযান চালিয়েছে ‘মারকা-ই-হক’-এর ব্যানারে ‘অপারেশন বুনইয়ানুম মারসুস’ শিরোনামে। আইএসপিআরের ভাষায়, এটি ছিল “সুনির্দিষ্ট ও কার্যকর প্রতিক্রিয়া”। তারা আরও জানায়, এই অপারেশন ছিল পরিকল্পিত এবং ভারতের হামলার জবাবে উপযুক্ত কৌশলগত পদক্ষেপ।
আইএসপিআরের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, নিহত সেনারা দেশের জন্য যে আত্মত্যাগ করেছেন, তা “চিরন্তন সাহস, নিষ্ঠা ও দেশপ্রেমের প্রতীক” হয়ে থাকবে।
কঠোর হুঁশিয়ারি:
আইএসপিআর স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, ভবিষ্যতে পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব বা ভৌগোলিক অখণ্ডতাকে চ্যালেঞ্জ করার যেকোনো প্রচেষ্টা “পূর্ণমাত্রার, নির্ধারিত ও কঠোর প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হবে”। এতে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমার বদলে আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে আন্তর্জাতিক মহল।
বর্তমান পরিস্থিতিতে দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন করে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। কূটনৈতিক পর্যায়ে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও পরিস্থিতি যে এখনও অস্থিতিশীল, তা স্পষ্ট দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি বিবৃতি ও সামরিক প্রস্তুতি থেকেই।