ঢাকা,  রোববার
০৪ মে ২০২৫

Advertisement
Advertisement

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করাই সবচেয়ে বড় সংস্কার" — হেফাজতের সমাবেশে এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ

প্রকাশিত: ১৬:০৬, ৩ মে ২০২৫

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করাই সবচেয়ে বড় সংস্কার

হাসনাত

আজ শুক্রবার ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ডাকে অনুষ্ঠিত এক মহাসমাবেশে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রধান সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।

তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করাই হবে সবচেয়ে বড় সংস্কার, কারণ এই দল বাংলাদেশকে কসাইখানায় পরিণত করেছে।”

হাসনাত অভিযোগ করে বলেন, “আওয়ামী লীগ কোনো রাজনৈতিক দল নয়, এটি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। তারা সারাদেশে কসাইতন্ত্র কায়েম করেছিল। আমরা শেখ হাসিনার ফাঁসি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।”

গণঅভ্যুত্থান ও সরকার পতনের পটভূমি

উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্রদের নেতৃত্বে সংগঠিত গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা হারায়। এরপর ৮ আগস্ট নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে দল গঠনের পর থেকেই রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞার দাবি জানিয়ে আসছে এনসিপি। এই দাবি আজকের সমাবেশে আরও জোরালোভাবে তুলে ধরেন হাসনাত আবদুল্লাহ।

৫ মে’র প্রসঙ্গ ও আলেম নিপীড়নের অভিযোগ

হেফাজতের অতীত ইতিহাস স্মরণ করে এনসিপি নেতা বলেন, “যেই শেখ হাসিনা ৫ মে এই দেশের আলেম-ওলামাদের উপর বর্বর হামলা চালিয়েছিল, সেই হাসিনাই আজ লেজ গুটিয়ে পালিয়েছে।” তিনি হেফাজত নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আজকের সমাবেশ থেকেই ৫ মে’র শহীদদের তালিকা প্রকাশ করুন এবং তাদের বিচারের দাবি জারি রাখুন।”

নারী সংস্কার কমিশন ও চার দফা দাবি

সমাবেশে আরও দাবি ওঠে সদ্য গঠিত নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিলের। এই বিষয়ে হাসনাত বলেন, “সংস্কারের নামে নারীদের নিয়ে যে বিতর্কিত প্রস্তাবনা এসেছে, তা অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে।”

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ আজকের এই সমাবেশে চার দফা দাবি উত্থাপন করে, যার মধ্যে রয়েছে:

  1. নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল

  2. ৫ মে ২০১৩ সালের ঘটনার শহীদদের স্বীকৃতি ও বিচার

  3. ইসলামবিরোধী শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক নীতির পর্যালোচনা

  4. দাওয়াত ওলামা পরিষদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি

সমাবেশে অংশগ্রহণ ও পরিস্থিতি

সকাল ৯টা থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আলেম, মাদ্রাসার ছাত্র ও সমর্থকেরা সমাবেশস্থলে উপস্থিত হতে শুরু করেন। দুপুর ১টা পর্যন্ত চলা সমাবেশে হাজারো মানুষের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়।

সমাবেশে বক্তৃতা রাখেন হেফাজতের শীর্ষস্থানীয় নেতা, ধর্মীয় স্কলার এবং ইসলামপন্থী বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হয়েছে এবং কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।


এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক উত্তেজনা আবারও বেড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার মতো স্পষ্ট রাজনৈতিক বক্তব্য এবং অতীত ঘটনাবলীর পুনরুল্লেখ বর্তমান পরিস্থিতিকে আরও সংবেদনশীল করে তুলছে। এখন দেখার বিষয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই দাবিগুলোর প্রতি কী ধরনের প্রতিক্রিয়া জানায়।

Advertisement
Advertisement

আরো পড়ুন  


Notice: Undefined variable: sAddThis in /home/dikdorshon/public_html/details.php on line 531