নতুন মার্কিন ভিসা নীতির চাপ সত্ত্বেও বিএনপিসহ বিরোধীদের চাপে রাখার কৌশল থেকে সরে আসবে না আওয়ামী লীগ। এমনকি বিরোধীদের কর্মসূচির পাল্টা কর্মসূচিও অব্যাহত রাখবে ক্ষমতাসীন দলটি। এ ছাড়া বিরোধীদের আন্দোলন মোকাবিলা করতে মাঠ পর্যায়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আরও বেশি সক্রিয় থাকবে। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।
মার্কিন ভিসা নীতির পর প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভেতরে যাতে অস্বস্তি ছড়িয়ে না পড়ে সে বিষয়েও সতর্ক রয়েছে আওয়ামী লীগ।
রোববার (২৮ মে) বিকেলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ এবং সহযোগী সংগঠনগুলোর শীর্ষ নেতারা বৈঠক করেন। সভার মূল লক্ষ্য ছিল বিএনপির কর্মসূচির পাল্টা কর্মসূচি তৈরির কৌশল প্রণয়ন।
আওয়ামী লীগ মনে করছে ঈদুল আজহার পর বিএনপি ঢাকায় জমায়েত, অবস্থানসহ বড় কর্মসূচির দিকে যাবে। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতিকে সরকারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ হিসেবে দেখাতে চাইবে তারা। কিন্তু আওয়ামী লীগ উল্টো চাপে ফেলতে পারলে বিএনপি বড় জমায়েত করতে পারবে না।
রোববারের যৌথ সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি এখন যেকোনোভাবে দেখাতে চায় আওয়ামী লীগ আক্রমণকারী। তিনি বলেন, কাজেই কোনো অবস্থাতেই মাথা গরম করবেন না। আক্রমণকারী হবেন না। দলীয় প্রধানের নির্দেশ হচ্ছে সব জেলা, মহানগর, ইউনিয়নে—প্রয়োজনে ওয়ার্ড পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে হবে।
দলীয় সূত্র বলছে, এখন থেকে সাংগঠনিক কাজের চেয়ে নির্বাচনী প্রচার ও বিরোধী দলকে কোণঠাসা করার কর্মসূচির প্রতি বেশি জোর দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে রাজধানী ঢাকাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে। এ জন্যই ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড কমিটি এখনই ঘোষণা করা হচ্ছে না।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কাঠামোতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের অধীনে ২৪টি থানা, ৭৫টি ওয়ার্ড এবং ৫টি ইউনিয়ন রয়েছে। অন্যদিকে ঢাকা মহানগর উত্তরের অধীনে ২৬টি থানা, ৬৪টি ওয়ার্ড ও একটি ইউনিয়ন রয়েছে। এর বাইরে ঢাকা জেলার অন্তর্ভুক্ত কেরানীগঞ্জ, সাভার ও ধামরাই উপজেলার তৎপরতাও বাড়ানো হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্রে জানা যায়, বিরোধীদের আন্দোলন কর্মসূচি বিবেচনায় রেখে দলের সব স্তরে ঐক্য দেখানোর চেষ্টা চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ।
রোববারের বৈঠকে ভিসা নীতি এবং বিএনপির চাপ কীভাবে সামলানো হবে এমন প্রশ্ন করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর দুজন ও সম্পাদকমণ্ডলীর তিনজন নেতা। তাদের বক্তব্যের সারমর্ম হচ্ছে আগামী চার-পাঁচ মাসে অনেক ‘মাইন্ড গেম’ হবে। এর মধ্যে যারা নিজেদের অনমনীয় প্রমাণ করতে পারবে, তারাই নির্বাচনে সুবিধাজনক অবস্থায় থাকবে।