শহীদ আফ্রিদির, বিরাট কোহলি, ক্রিস গেইল, হাসাল আলী, রিজওয়ান বা দেশীয় ক্রিকেট তারকা মেহেদী হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ, লিটন দাস, ইমরুল কায়েস, এনামুল হক বিজয়, সাব্বির রহমান, নাজমুল হোসেন শান্তর হেয়ার স্টাইলের ভরসা এখন বাংলাদেশ আক্তার আলী।
গেল বছরের ডিসেম্বরে যখন বাংলাদেশ সফরে আসে ভারত ক্রিকেট দল। সে সময় বিরাট কোহলির চুল কাটার জন্য আক্তার আলীকে ডাকা হয়। হোটেলে গিয়ে তিনি বিরাটের চাহিদামতো চুল কেটে দেন। আর সন্তুষ্ট হয়ে বিরাট পরবর্তীতে একটি টিভিসির শুটে আবারও ডেকে নেন আক্তার আলীকে। দুই দিন তাঁর সঙ্গে ‘হেয়ার স্টাইলিস্ট’ হিসেবে কাজ করে দারুণ খুশি আক্তার আলীও। তিনি বলেন, নিজের চুল ও ত্বক নিয়ে খুবই খুঁতখুঁতে বিরাট। তবে আমার কাজে তিনি খুবই খুশি হয়েছেন।
এছাড়া বিপিএল খেলতে এসে শহীদ আফ্রিদির চুল কাটাতে ডেকে আনা হয় আক্তারকে। শুধু বিদেশি ক্রিকেটাররাই নন, দেশের তারকা ক্রিকেটার থেকে বিনোদন জগতের তারকা অনেকেই মাথা পেতে দিয়েছেন আক্তার আলীর কাঁচির নিচে।
কীভাবে দেশ বিদেশের ক্রিকেটারদের আস্থা অর্জন করলেন আক্তার? এ বিষয়ে তিনি জানান, শুরুতে আমার কাছে চুল কাটাতেন ক্রিকেটার এনামুল হক বিজয়। তাঁর নানা রকম স্টাইল করেছি আমি। এরপর তাঁর কাজ দেখেই বাকিরা আগ্রহ প্রকাশ করেন। এভাবেই একজন থেকে আরেকজন করে অনেক তারকা ক্রিকেটারের চুল ছেঁটে দিয়েছি। তবে ক্রিকেটারদের অনেক ব্যস্ততা থাকে। তাই কখনো হয়তো ফোন দিয়ে জরুরিভাবে বাসায় ডেকে নেন, কেউ ডাকেন হোটেলে। আবার সময় পেলে নিজেরাও চলে আসেন স্যালুনে। তবে তাঁরা যেভাবে চান, সেভাবেই আমি নিজের কাজটা সমন্বয় করার চেষ্টা করি।
আক্তার জানান, এবারের বিশ্বকাপে যাওয়ার আগেও চুলের কেটে গেছেন ক্রিকেটার মেহেদী হাসান মিরাজ ও লিটন দাস। আক্তার আলী এবার যেমন মিরাজের চুলে দিয়েছেন আন্ডার কাট থ্রেট স্টাইল। আর লিটনের চুলে স্পাইক কাট দিয়েছেন। আক্তার যখনই কোনো তারকার চুলে হাত দেন, তাঁরা বলতে গেলে নির্ভারই থাকেন।
অন্যদের চেয়ে চুল কাটায় কি আলাদা বিষয় আক্তার আলীর? এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন আক্তার বলেন, কেউ যখন আমার কাছে চুল কাটাতে আসেন, প্রথমেই তাঁর মুখের গড়নটা বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করি। তখন চিন্তা করি তার কোন ধরনের কাটে তাকে আরও ভালো দেখাবে, ক্রেতা ঠিক আছে বললে তারপর সেই কাট দেওয়ার চেষ্টা করি।
ক্রিকেট তারকা ছাড়াও অভিনেতা শাকিব খান, অনন্ত জলিল, অপূর্ব, তাহসান খানের মতো অনেক তারকার চুলের স্টাইলও করেছেন আক্তার আলী।
ধানমন্ডির সাত মসজিদ রোডের (৯/এ) ইস্টার্ন এলিট সেন্টারে তার আক্তার আলী হেয়ার স্টুডিও নামে পাশাপাশি দুটি স্যালুন রয়েছে।
মোহাম্মদপুর বিহারি ক্যাম্পে বেড়ে ওঠা আক্তার আলী ২০০১ সালে এই পেশা শুরু করেন। ঢাকার নিউমার্কেট ও কাঁটাবনের বিভিন্ন দোকানে কাজ শিখেছেন তিনি। এখন নিজের স্যালুন সামলাচ্ছেন সাত বছর ধরে। তার রয়েছে ২২ জন কর্মী। তিন সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে তার পরিবার।