আদর্শ নেতা হতে হলে যে ৭টি অভ্যাস চর্চা থাকতে হবে
নেতৃত্ব দেওয়া অনেক কঠিন কাজ। তবে সবাই নেতৃত্ব দিতে চায়। সেটি পরিবার কিংবা অফিস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিংবা দেশ বা বিদেশ—সবখানেই দৃঢ় নেতার দরকার। অনেকেই বলেন, দৃঢ় নেতৃত্বগুণ নাকি সহজাত, কারও ভেতরে থাকে, কারও থাকে না। কিন্তু সেটি কি আদো ঠিক? কয়েকটি বিশেষ অভ্যাস রপ্ত করুন। আপনিও বিকশিত হতে পারেন একজন দারুণ নেতা হিসেবে...
১. প্রতিকূল পরিস্থিতিকে চ্যালেঞ্জ নয়, সুযোগ হিসেবে নিন
কোনো প্রতিকূল পরিস্থিতি যখন সামনে আসে অনেকেই অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন। অনেকে ঘাবড়ে যায়। আবার এসব পরিস্থিতি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে ফেলে অনেকে। কিন্তু যারা সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন, তারা নতুন বা প্রতিকূল পরিস্থিতিকে কখনোই চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেন না। তারা এ ধরনের পরিস্থিতিকে নিজেদের জন্য সুযোগ হিসেবে দেখেন। তাই চ্যালেঞ্জ না নিয়ে, যেকোনো পরিস্থিতিকে নিজের সেরাটা দেওয়ার সুযোগ হিসেবে নিয়ে কীভাবে তা কাজে লাগানো যায়, সেটা ভাবুন।
২. নিজের পরিকল্পনা সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিন
আপনি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার। আপনার নতুন একটি কর্মপরিকল্পনা নিতে হবে শিগগিরই। অনেক ভেবে যখন একটা পরিকল্পনা দাঁড় করালেন। কিন্তু এতে কি কাজ শেষ? না একজন নেতার দায়িত্ব হলো যেকোনো পরিকল্পনা দলের সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া। পুরো কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য তা প্রতিষ্ঠানের সব কর্মীর মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। তাই নিজের চিন্তাভাবনা উন্মুক্ত করে দিন। ছড়িয়ে দিন দলের সবার মধ্যে।
৩. আগে নিজে করুন, তারপর অন্যকে অনুসরণ করতে বলুন
নেতা মানেই পথপ্রদর্শক। আপনার চালচলন হবে দলের সবার জন্য অনুকরণীয়। আপনার কথা বলার ধরন বা অফিসে আপনি সবার আগে ঢুকছেন কি না, এসব বিষয় দলের অন্যদের চোখে বেশি পড়ে। সব সময় মনে রাখতে হবে যে সবাই আপনাকে দেখছে, আপনাকে অনুসরণ করছে। তাই কোনো কাজে নামার আগে নিজে বিশ্বাস করুন যে কাজটা আপনি পারবেন। আগে নিজের আত্মবিশ্বাস দৃঢ় করুন, তারপর বাকিদের তা অনুসরণ করতে বলুন।
৪. জানার বা শেখার আগ্রহ বাড়ান
প্রকৃত নেতারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অযথা সময় নষ্ট করেন না। তারা প্রতিটা মুহূর্ত কীভাবে কাজে লাগানো যায়, তা নিয়ে ভাবেন। সেই সঙ্গে নতুন কিছু জানার বা শেখার চেষ্টা করেন। সময়ের মূল্য দিতে শিখতে হবে এবং এমন মানুষের আশপাশে থাকুন, যাদের অভিজ্ঞতা আপনাকে নতুন কিছু জানতে বা শিখতে সাহায্য করে।
৫. নিজের পরিকল্পনা ত্যাগ করতে সাহসী হোন
নেতাদের একাই অনেক ধরনের পরিকল্পনা সাজাতে হয়। পরে তা ছড়িয়ে দিতে হয় দলের সবার মধ্যে। অনেক সময় বৃহৎ স্বার্থে ভালো কোনো পরিকল্পনা থেকেও সরে আসারও প্রয়োজন পড়ে। তাই যদি প্রকৃত নেতা হতে চান, যেকোনো সময় নিজের পরিকল্পনা ত্যাগ করার দৃঢ় মানসিকতাও বুকে ধারণ করুন।
৬. আপনার অধীন অন্যদের যথেষ্ট স্বাধীনতা দিন
সব সিদ্ধান্ত নিজের হাত ধরেই বাস্তবায়িত হবে এমনটা নয়। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, দলের একজন সাধারণ সদস্যের মধ্যে একটি বিশেষ কাজ করার দক্ষতা থাকে। তাই আপনার অধীন কেউ যদি বিশেষ কোনো কাজে দক্ষ হয়ে থাকে, তাহলে তাকে তা স্বাধীনভাবে করতে দিন।
৭. চোখ-কান খোলা রেখে ঝুঁকি নিন
সবার স্বার্থে নেতাদের বেশির ভাগ সময়ই কিছু ঝুঁকি নিতে হয়। এসব ঝুঁকি নিতে গিয়ে অনেক সময়ই হিতে বিপরীত হতে পারে। তখন আপনার নেতৃত্বের ব্যর্থতার দায় দলের সবার ওপর এসে পড়ে। তাই কোনো ঝুঁকি নেওয়ার আগে সাতপাঁচ ভাবুন। সব দিক দেখে চোখ-কান খোলা রেখে সাবধানী পা বাড়ান।