
কার্গো
ভারত হঠাৎ করেই ৮ এপ্রিল ২০২৫ থেকে বাংলাদেশি পণ্যের তৃতীয় দেশে ট্রান্সশিপমেন্টের সুবিধা বাতিল করেছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকরা একটি গুরুত্বপূর্ণ করিডর হারিয়েছেন, যা পূর্বে সড়কপথে কলকাতা ও দিল্লি হয়ে বৈশ্বিক বাজারে পণ্য পাঠানোর সুযোগ দিত। ভারতের দাবি, এই ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা তাদের নিজস্ব রপ্তানি কার্যক্রমে বিলম্ব ও ব্যয় বৃদ্ধি করছিল ।
বাংলাদেশের প্রতিক্রিয়া ও পদক্ষেপ
এই বাধার মুখে বাংলাদেশ সরকার দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ২৭ এপ্রিল প্রথমবারের মতো সরাসরি কার্গো ফ্লাইট চালু হয়েছে, যা প্রায় ৬০ টন তৈরি পোশাক স্পেনের উদ্দেশ্যে পরিবহন করেছে । এই উদ্যোগের মাধ্যমে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ওপর চাপ কমানো এবং রপ্তানি খাতে বিকেন্দ্রীকরণ নিশ্চিত করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও কার্গো কার্যক্রম পুনরায় চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের রপ্তানি খাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হচ্ছে এবং ভারতের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে স্বনির্ভরতা অর্জনের পথে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও চ্যালেঞ্জ
বাংলাদেশ সরকার রপ্তানি খাতে প্রতিযোগিতামূলক পরিবহন ব্যয় নিশ্চিত করতে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং চার্জ ও জ্বালানি খরচ কমানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এছাড়া, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে বার্ষিক কার্গো সক্ষমতা ২ লাখ টন থেকে ৫ লাখ ৪৬ হাজার টনে উন্নীত হবে ।
তবে, এই নতুন উদ্যোগগুলোর সফলতা নির্ভর করবে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, ব্যয় নিয়ন্ত্রণ এবং রপ্তানিকারকদের জন্য সহজলভ্য সেবা নিশ্চিত করার ওপর। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই পদক্ষেপগুলো বাংলাদেশের রপ্তানি খাতে দীর্ঘমেয়াদে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।