ডায়েট
আজ বিশ্ব ভেগান দিবস। জীবনযাপনের এই পদ্ধতিতে খাদ্য হিসেবে প্রাণিজ উৎস থেকে কোনো খাবার খাওয়া হয় না। খাওয়া হয় উদ্ভিজ্জ খাবার। শাকসবজি, ফল, ডাল, বীজ ও বাদাম নিরামিষ খাদ্যের একটি বড় অংশ গঠন করে। তারকা, ক্রীড়াবিদসহ অনেকে এখন ভেগান ডায়েটে অভ্যস্ত। তবে ভেজিটেরিয়ান আর ভেগান কিন্তু এক নয়। ভেজিটেরিয়ানরা উদ্ভিজ্জ খাবারের পাশাপাশি দুধ, ডিম ইত্যাদি প্রাণিজ আমিষও খেয়ে থাকেন।
উপকারিতা
ওজন কমাতে ও ব্লাড সুগার বা রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
গাউট বা ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে ভেগান ডায়েট খুবই উপকারী।
ভেগান ডায়েট প্রদাহ প্রতিরোধী। এটি শরীরে ব্যথা কমাতে বা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
প্রাণিজ আমিষে চর্বি থাকে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এতে তা নেই।
ভেগান ডায়েট হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমায় ও হৃৎপিণ্ডের সুস্থতা নিশ্চিত করে।
ভেগান ডায়েট উচ্চ ফাইবারসমৃদ্ধ, তাই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং অ্যানাল ফিসার, পাইলস, রেক্টাল ক্যানসারের মতো রোগের ঝুঁকি কমায়।
জটিলতা
সব প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো অ্যাসিড ভেগান ডায়েট থেকে পাওয়া সম্ভব নয়।
ভেগান ডায়েট সঠিকভাবে অনুসরণ না করলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি হতে পারে।
প্রয়োজনীয় যথেষ্ট পরিমাণে আমিষ উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে পাওয়া মুশকিল।
উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে প্রাপ্ত আয়রন জিংক শোষণের হার কিছুটা কম থাকায়, ভেগান ডায়েটে রক্তস্বল্পতা দেখা দিতে পারে।
ক্যালসিয়ামের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি উৎস দুধ, যা ভেগান ডায়েটে নেই।
করণীয়
শরীরের ওজন অনুযায়ী আমিষের চাহিদা মেটাতে হয়। ভেগান ডায়েটে আমিষের উৎস হিসেবে ডাল, শিমের বিচি, মটরশুঁটিসহ সব ধরনের বাদাম, সয়াবিন, সয়ামিট পর্যাপ্ত পরিমাণে খেতে হবে।
বেশির ভাগ ডালে মেথিওনিন ও সিস্টাইন এসেনশিয়াল অ্যামাইনো অ্যাসিডের ঘাটতি থাকে। আবার সয়াবিন ও বাদামে মেথিওনিন এবং সিস্টাইন এসেনশিয়াল অ্যামাইনো অ্যাসিড বেশি থাকে। যেকোনো ডালের সঙ্গে সয়াবিন বা বাদাম মিশিয়ে রান্না করলে সব এসেনশিয়াল অ্যামাইনো অ্যাসিড পাওয়া যাবে। এই প্রোটিন ফার্স্টক্লাস প্রোটিন।
প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী, ভিটামিন বি-১২, জিংক, আয়রন ও ক্যালসিয়ামের সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করতে হবে।
গুড ফ্যাট ও বিভিন্ন মাইক্রো-ম্যাক্রো নিউট্রিয়েন্টের চাহিদা পূরণ করতে খাদ্যতালিকায় কাঠবাদাম, আখরোট, সূর্যমুখীর বীজ, কুমড়ার বীজ, ফ্ল্যাক্স সিড যোগ করতে হবে।
দীর্ঘদিন ভেগান ডায়েট চর্চা করতে চাইলে অবশ্যই পুষ্টিবিদের নির্দেশনা মেনে চলুন। প্রতি তিন মাস পর একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নির্দিষ্ট কিছু শারীরিক পরীক্ষার মাধ্যমে নিজের সুস্থতা নিশ্চিত করে নিন।
মো. ইকবাল হোসেন, জ্যেষ্ঠ পুষ্টিবিদ, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল



.png)
.png)