ফুসফুস
বিশ্ব সিওপিডি দিবস আজ ১৯ নভেম্বর। প্রতিবছর নভেম্বরের তৃতীয় বুধবার পালিত হয় বিশ্ব সিওপিডি দিবস। ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ বা সিওপিডি দীর্ঘস্থায়ী বায়ুপ্রবাহে বাধা প্রদানকারী ফুসফুসের রোগ। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘শ্বাসকষ্ট দেখলে সিওপিডির কথা ভাবুন’।
সিওপিডি প্রতিরোধ ও চিকিৎসাযোগ্য, বিশেষত যদি প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত হয়। সঠিক চিকিৎসা, ফুসফুসের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ, শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম, পুষ্টিসহায়তা, প্রতিষেধক টিকা ও ধূমপান ত্যাগ করে এ রোগে আক্রান্ত অনেক মানুষ সক্রিয় ও পরিপূর্ণ জীবনযাপন চালিয়ে যেতে পারেন।
কীভাবে বুঝবেন, কেন হয়
সিওপিডিতে আক্রান্ত ব্যক্তিরা হাঁটা, সিঁড়ি বেয়ে ওঠা, এমনকি দীর্ঘ সময় কথা বলার মতো দৈনন্দিন কাজেও রুদ্ধশ্বাস অনুভব করেন। রোগটি ধীরে ধীরে বিকশিত হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে খেয়াল না–ও হতে পারে। এ কারণে অনেক ক্ষেত্রে দেরিতে রোগ নির্ণয় করা হয়।
ধূমপান সিওপিডির সবচেয়ে সাধারণ কারণ, তবে এটিই একমাত্র কারণ নয়। কর্মক্ষেত্রে বায়ুদূষণ, পরোক্ষ ধোঁয়া, ধুলা, ধোঁয়া ও রাসায়নিকের দীর্ঘমেয়াদি সংস্পর্শে থাকাও ফুসফুসের ক্ষতি করতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে, বংশগত কারণের ভূমিকাও থাকে।
সচেতনতা জরুরি কেন
বিশ্বব্যাপী লাখো মানুষ সিওপিডিতে আক্রান্ত। অনেকেই যে রোগটিতে আক্রান্ত, সেটা তাঁরা নিজেরা জানেন না। প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা গেলে জীবনযাত্রার পরিবর্তন ও ওষুধ সেবনের মাধ্যমে রোগটির অগ্রগতি ধীর করে দেওয়া যায়।
শ্বাস-প্রশ্বাসের সামান্য অস্বস্তিও দৈনন্দিন কাজকর্ম, ঘুমের মান, মানসিক সুস্থতায় প্রভাব ফেলে। তামাকজাত পণ্য পরিহার, দূষণের সংস্পর্শ কমানো ও ফুসফুসের জন্য স্বাস্থ্যকর অভ্যাস বজায় রাখা ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমায়।
এ রোগ উদ্বেগ ও হতাশা তৈরি করে। সামাজিক কার্যকলাপকে সীমিত করতে পারে। তাই আগেই সচেতন হতে হবে।
করণীয়
সিওপিডি হলে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ধূমপান এড়িয়ে চলুন। চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে ব্যায়াম করুন। মানসিক চাপ মোকাবিলা করতে সাহায্য নিন। পরিচ্ছন্ন পরিবেশে থাকুন। বাড়িতে বায়ুদূষণ যেন না হয়, তা নিশ্চিত করুন।
অতিরিক্ত ওজন হলে তা কমান। দৌড়, হাঁটা, সাইকেল চালানো, সাঁতার এমনকি জিমে যাওয়ার মাধ্যমে সক্রিয় থাকুন। সিওপিডি দ্রুত ও সহজে নির্ণয় করা হয় না। কারণ, এর প্রাথমিক লক্ষণকে ‘স্বাভাবিক বার্ধক্য’, ‘ফিটনেসের অভাব’ বা ‘ধূমপানের কারণে কাশি’ বলে ভুল করা হয়।
অনেকে শ্বাসকষ্টে অভ্যস্ত হয়ে যান, বুঝতেও পারেন না যে রোগটি হয়েছে। এই বিলম্বের কারণে রোগটি নির্ণয় করতে করতে ফুসফুসের ক্ষতিও অনেক বেড়ে যায়।
ডা. মো. জাকির হোসেন সরকার, সভাপতি, বাংলাদেশ ইন্টারভেনশনাল পালমোনোলজি, ক্রিটিক্যাল কেয়ার অ্যান্ড স্লিপ সোসাইটি (বিপস)



.png)
.png)