
তোতলামি
সমাজে কিছু মানুষ কথা ঠিকভাবে বলতে পারেন না। কথা তাঁদের জিভে আটকিয়ে যায়। কথা বলার এই স্বাভাবিকতার ছন্দপতনকেই তোতলামি বলা হয়। তোতলামির সঠিক কারণ না থাকলেও প্রায়ই দেখা যায় অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা, কথা বলতে গিয়ে নার্ভাস হওয়া, দ্রুত কথা বলার চেষ্টা করা, আত্মবিশ্বাসের অভাব ইত্যাদি নানা কারণেই হয়ে থাকে। পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় ১ শতাংশ মানুসের এই সমস্যা রয়েছে।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, তোতলামি অনেকেই হাসি-তামাশার বিষয় হিসেবে দেখে। এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে ১৯৯৮ সাল থেকে প্রতিবছর ২২ অক্টোবর নিয়ম করে তোতলামি সচেতনতা দিবস পালন করা হয়। এর মাধ্যমে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়—
তোতলামি একটি রোগ।
তোতলামির কারণে কাউকে ব্যঙ্গ করা ঠিক না।
কাউকে অনুকরণ করা যাবে না।
তোতলামির কারণে নির্দিষ্ট ব্যক্তির প্রতি রাগ বা বিরক্তি প্রকাশ করা যাবে না।
একই কথা বারবার বলতে বাধ্য করা যাবে না।
তোতলামি কেন হয়
মানুষের স্বরযন্ত্রে শব্দ উৎপন্ন হলেও তা ফুটিয়ে তুলতে তালু, দাঁত, জিহ্বা, মুখগহ্বর প্রতিটির সমন্বয় থাকা আবশ্যক। এই সমন্বয় এবং কোন ধ্বনির পর কোন ধ্বনি উচ্চারিত হবে তা নিয়ন্ত্রণ করে মস্তিষ্ক। পুরো প্রক্রিয়ার যেকোনো ধাপে ব্যাঘাত ঘটলে বা অমিল হলে ওই ব্যক্তি তোতলামিতে
তোতলামির চিকিৎসা
তোতলামির একমাত্র চিকিৎসা থেরাপি। সঠিক সময়ে থেরাপির মাধ্যমে একজন অভিজ্ঞ স্পিচ থেরাপিস্ট সম্পূর্ণভাবে তোতলামি সারিয়ে তুলতে পারেন। থেরাপির তিনটি ভাগ রয়েছে—ইনডিভিজ্যুয়াল থেরাপি, গ্রুপ থেরাপি এবং কাউন্সেলিং থেরাপি। কোনো প্রকার অপারেশনে তোতলামি ভালো সম্ভব নয়।
ভয় করতে হবে জয়
যাঁদের তোতলামির সমস্যা রয়েছে, তাঁদের কথা বলার সময় মন থেকে সব ধরনের ভয় বা আতঙ্ক দূর করতে হবে। অনেকের মধ্যে তোতলামির কারণে কথা আটকে যাওয়ার একটি ভয় কাজ করে। এই ভয় যখন পেয়ে যায় তখন কথা আরও বেশি জড়িয়ে যায়।
একটি ঘরোয়া কার্যকর ব্যায়াম
যাঁরা তোতলামিতে ভোগেন। তাঁরা ঘরে-বাইরে যেখানেই পানি খাবেন স্ট্র বা পাইপ দিয়ে পানি পান করুন। এটি একধরনের মুখের ব্যায়াম, যা তোতলামি সমস্যা কমাতে পারে। স্ট্র দিয়ে পানি পানের সময় মুখের মধ্যে জিভের যে অবস্থান, তা কথা বলার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।