
গরমে ঘামাচি
সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক তাঁর এক কবিতায় বলেছেন- ‘আকাশের ঘামাচি কি ঘন কালো মেঘ?’ কবি ঘামাচি নিয়ে যাই বলুক না কেন, বাংলাদেশে প্রচণ্ড গরমের দিনে বহু মানুষের ত্বকের একটি প্রধান সমস্যার নাম ঘামাচি। এতে শরীরে অস্বস্তি বোধ হয়। আর ঘামাচি সহজে যেতে চায় না। কোনো কোনো পাউডার বা সাবান ঘামাচি সমস্যা দূর করতে পারলেও তা পুরোপুরি সারাতে পারে না। এটা এক ধরনের চর্মরোগ। দেহের ঘর্মগ্রন্থিগুলোর মুখ ময়লা (ত্বকের মৃত কোষ) ও ব্যাকটেরিয়ার কারণে যখন আটকে যায়, ঘাম শরীর থেকে বের হতে পারে না তখন সেখানে ঘামাচি হয়। ঘামাচি সমস্যা শিশুদের শরীরে বেশি দেখা যায়। ঘামাচি হলে চুলকানি ও লাল দানা হয়। জ্বালা করে। ত্বক লালও হয়।
ঘামাচির সমস্যা দূরীকরণে কয়েকটি ঘরোয়া উপায়:
> নিমপাতার অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান ঘামাচি নিরাময়ে সাহায্য করে। নিমপাতার পেস্ট তৈরি করুন। শরীরে লাগিয়ে সম্পূর্ণ শুকিয়ে নিন। এরপর ধুয়ে ফেলুন। এভাবে দিনে ৩-৪ বার করুন।
> ৪ টেবিল চামচ মুলতানি মাটিতে পরিমাণ মতো গোলাপ জল মিশিয়ে নিন। এবার ঘামাচির উপর কিছুক্ষণ রেখে শুকিয়ে নিন। তারপর ধুয়ে ফেলুন।
> শুকনো কাপড়ে টুকরো বরফ নিয়ে ঘামাচির উপর ১০-১৫ মিনিট হালকা করে দিনে ৩-৪ বার ঘষুন। ভাল ফল পাবেন।
> ১ কাপ ঠাণ্ডা পানি ও ১ টেবিল চামচ বেকিং সোডা গুলিয়ে নিন। সে পানিতে পরিষ্কার কাপড় ভিজিয়ে তা ভালো করে নিংড়ে ঘামাচির স্থানে লাগান। আরাম পাবেন।
> লেবুর শক্তিশালী অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান ঘামাচি দূর করতে বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখে। উপকার পেতে এক গ্লাস করে দিনে ৩/৪ বার লেবুর রসের পানি পান করুন।
> শরীরের ঘামাচিস্থানে কয়েক দিন নিয়মিত ঘৃতকুমারীর (অ্যালোভেরা) পাতা থেকে জেল বা নির্যাস বের করে হলুদের সঙ্গে মিশিয়ে শরীরে ব্যবহার করুন। জেল শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। ঘামাচি দূর হবে।
> বৃষ্টির পানিতে গোসল করুন। কারণ বৃষ্টির পানি ঘামাচি দূর করতে সাহায্য করে।
> ঘামাচি দূর করতে চন্দনের গুঁড়া গোলাপজলের সাথে মিশিয়ে পেস্ট করে ঘামাচির স্থানে কয়েকবার লাগান। উপকার পাবেন।
আকারে ও প্রকারে ঘামাচি ছোট হলেও খুব অস্বস্তিকর। এই অস্বস্তিকর ঘামাচি দূর করতে পর্যাপ্ত পানি পান করুন নিয়মিত। গরম আবহাওয়া নিয়মিত এড়িয়ে চলুন। ফলের রস খান। প্রতিদিন গোসল করে পরিচ্ছন্ন থাকুন।