ঢাকা,  শুক্রবার
২৫ এপ্রিল ২০২৫

Advertisement
Advertisement

সীমান্তগ্রাম থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ফারহানা ও তামান্নার স্বপ্নযাত্রা

প্রকাশিত: ১৪:২৪, ১৫ মার্চ ২০২৫

সীমান্তগ্রাম থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ফারহানা ও তামান্নার স্বপ্নযাত্রা

তামান্না

শুকনা মৌসুমে ধুলামাখা পথ আর বর্ষায় কর্দমাক্ত মেঠো পথ পাড়ি দিয়ে দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম দক্ষিণ দাউদপুরের দুই মেয়ে ফারহানা আক্তার ও সাদিয়া তামান্না দাখিল সম্পন্ন করেন। আলিম পর্যায়েও সাত কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে শিক্ষাগ্রহণ করেন তাঁরা। তাঁদের অধ্যবসায়ের ফসল—এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ। তাঁরা এই গ্রামের প্রথম শিক্ষার্থী, যাঁরা এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন।

৬ মার্চ প্রকাশিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খ ইউনিট (কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে উত্তীর্ণ হন ফারহানা ও তামান্না। ফারহানার মেধাক্রম ৬৭৩ এবং তামান্নার ৭২১। ফারহানা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখেন, অন্যদিকে তামান্নার লক্ষ্য বিসিএস ক্যাডার হয়ে দেশের সেবা করা।

ফারহানা আক্তারের বাবা দবিরুল ইসলাম একজন বর্গাচাষি এবং বর্ষায় মাছের পোনার ব্যবসা করেন। মা শিউলি আক্তার মেয়ের ভর্তি খরচ নিয়ে চিন্তিত। অন্যদিকে, তামান্নার বাবা আতাউর রহমান একজন সহকারী মৌলভি। দুজনেই দাউদপুর দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল ও মুকুন্দপুর ফাজিল মাদ্রাসা থেকে আলিম পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।

ফারহানা বলেন, তাঁর বাবা অনেক কষ্ট করে পড়াশোনার খরচ চালিয়েছেন। সীমান্তবর্তী গ্রাম হওয়ায় এলাকায় মাদকের প্রভাব বেশি, কিন্তু সমস্ত প্রতিকূলতা জয় করেই তাঁরা এখানে পৌঁছেছেন।

তাঁদের শিক্ষক, মুকুন্দপুর ফাজিল মাদ্রাসার ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক জাকির হোসাইন বলেন, ‘তাঁরা আমাদের গর্ব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁদের সাফল্য আমাদের অনুপ্রাণিত করবে।’

বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুজহাত তাসনীম বলেন, ‘তাঁরা শুধু বিরামপুর নয়, পুরো দেশের মেয়েদের জন্য অনুপ্রেরণা। ভর্তি ও পড়াশোনার খরচ নিয়ে কোনো সমস্যা হলে প্রয়োজনীয় সহায়তার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

ফারহানার পরিবার মেয়ের ভর্তি খরচের জন্য আর্থিক সহযোগিতার প্রত্যাশায় রয়েছে। কেউ পাশে দাঁড়ালে তাঁর উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে পারে।

Advertisement
Advertisement

আরো পড়ুন  


Notice: Undefined variable: sAddThis in /home/dikdorshon/public_html/details.php on line 531