
মোবাইল সিম
স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর নিজের মোবাইল সিমটি বন্ধ করে দেন এক নারী। ঘটনা ২০১৯ সালে। তার ওই নম্বর দিয়ে খোলা ফেসবুক অ্যাকাউন্টও ডি-অ্যাকটিভ করা হয়। কিন্তু তিন বছর পর সেই ফেসবুক আইডি সচল দেখে তিনি বিস্মিত হন। কারণ তিনি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট অ্যাকটিভ করেননি।
এর কয়েকদিন পর তিনি জানতে পারেন, তার ওই আইডি থেকে বিভিন্ন জনের কাছে টাকা চাওয়া হচ্ছে! এ ব্যাপারে থানায় প্রথমে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) ও পরে মামলা করেন তিনি। এরপর তদন্তে বেরিয়ে আসে, তার বন্ধ সিম পুনরায় সচল করে বিক্রি করেছে সংশ্লিষ্ট মোবাইল অপারেটর। আর সেটি হাতে পেয়ে পুরোনো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট সচল করেছে এক প্রতারক।
ওই নারী জানান, সাবেক স্বামী যাতে যোগাযোগ করতে না পারে, সে জন্যই তিনি সিম ও ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন। কিন্তু সেখান থেকেই তাকে হয়রানি করা শুরু হয়।
ভুক্তভোগী বলেন, প্রতারক প্রথমে পুরোনো ফেসবুক আইডি থেকে সাবেক স্বামীর সঙ্গে আমার অন্তরঙ্গ কিছু ছবি ও ভিডিও পাঠায়। পরে ওইসব ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ২০ হাজার টাকা দাবি করে। তারা একটি ফোন নম্বর দিয়ে মোবাইলে টাকা চায় এবং বলে আমার সবকিছু তাদের কাছে রয়েছে।
আরও পড়ুন: দুই ঘোড়া নিয়ে পুতিনের কাছে গেলেন অস্ট্রেয়ার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আতিক বলেন, ভুক্তভোগী নারীর কাছে যে ফোন নম্বরে টাকা চাওয়া হয় সেটির সূত্র ধরে নওগাঁ থেকে সুজন কুমার নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সুজন জানিয়েছে, তার সঙ্গে দোকানে এক কিশোর চাকরি করত। ওই কিশোরের মা সিমটি কিনে ছেলেকে দিয়েছেন। ওই কিশোর ফেসবুক আইডি খোলার জন্য সুজনকে বললে, তিনি দেখেন ওই নম্বরে ফেসবুকে একটি অ্যাকাউন্ট আছে। সুজন তখন সেই আইডি দিয়ে প্রতারণা শুরু করে।
বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, মোবাইল অপারেটররা গ্রাহকের অব্যবহৃত সিম বিক্রি শুরু করেছে অনেক আগেই। ওইসব সিমের মাধ্যমে এখন প্রতারণার অভিযোগ আসছে। বেশি প্রতারণার শিকার হচ্ছেন প্রবাসীরা। দীর্ঘদিন দেশের বাইরে থাকায় তাদের বন্ধ সিম এক সময় রিসাইকেল করছে ফোন কোম্পানিগুলো। তাতে প্রবাসীদের ব্যক্তিগত তথ্য ও ই-ব্যাংকিং হিসাব নম্বর হুমকিতে পড়ছে। কেউ কেউ পাসপোর্ট নিয়েও জটিলতায় পড়ছেন।