বিশ্বব্যাপী পুরুষাঙ্গের ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ব্রাজিলে গত এক দশকে এই ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ৬ হাজার ৫০০ জনের বেশি পুরুষের অঙ্গচ্ছেদ করতে হয়েছে।
পুরুষাঙ্গের ক্যানসার এটি একটি বিরল রোগ। তবে এ ঘটনায় ত্যুর হার বিশ্বজুড়ে বেড়ে চলেছে।
সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, দেশ ব্রাজিলে প্রতি এক লাখ পুরুষের মধ্যে ২ দশমিক ১ জনের এই রোগ হয়, যা এ–যাবৎকালে সর্বোচ্চ হার।
ব্রাজিলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০১২ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ২১ হাজার ব্যক্তির পুরুষাঙ্গের ক্যানসার হওয়ার খবর নথিভুক্ত হয়েছে। এতে ৪ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আর গত এক দশকে গড়ে প্রতি দুই দিনে একজনের পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলতে হয়েছে। সংখ্যায় যা ৬ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি।
পুরুষাঙ্গের ক্যানসারের লক্ষণ শুরু হয় একটি ঘা দিয়ে। যা কিছুতেই নিরাময় হয় না এবং ওই ঘা থেকে তীব্র গন্ধযুক্ত স্রাব বের হতে পারে। কারও কারও ক্ষেত্রে রক্তপাত হয় এবং পুরুষাঙ্গের রং পরিবর্তিত হয়ে যায়।
এই ক্যানসার প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা হলে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ক্ষত অপসারণ, রেডিওথেরাপি ও কেমোথেরাপির মতো চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হওয়া যায়। কিন্তু যদি চিকিৎসা করা না হয়, তাহলে পুরুষাঙ্গের আংশিক বা সম্পূর্ণ বিচ্ছেদ এবং আশপাশের যেমন অণ্ডকোষও কেটে ফেলার প্রয়োজন হতে পারে।
ব্রাজিলিয়ান সোসাইটি অব ইউরোলজির চিকিৎসক মাউরিসিও ডেনার কর্ডেইরো বলেছেন, যৌন ভাইরাস হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাসের (এইচপিভি) ক্রমাগত সংক্রমণ এই রোগের ঝুঁকির প্রধান একটি কারণ। শারীরিক সংসর্গের সময় এইচপিভি সংক্রমণ হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে এই সংক্রমণ মুখ ও পুরুষাঙ্গের ক্যানসারের কারণ হতে পারে।
মাউরিসিও ডেনার কর্ডেইরো বলেন, সংক্রমণ ও ক্ষত প্রতিরোধে এইচপিভির বিরুদ্ধে গণটিকা দরকার। ব্রাজিলে এই টিকা দেওয়ার হার অনেক কম। ‘ব্রাজিলে ভ্যাকসিন সহজলভ্য হওয়া সত্ত্বেও মেয়েদের এইচপিভি টিকা দেওয়ার হার কম, মাত্র ৫৭ শতাংশ। আর পুরুষদের ক্ষেত্রে তা ৪০ শতাংশের বেশি নয়। রোগ প্রতিরোধের জন্য টিকা দেওয়ার আদর্শ হার হলো ৯০ শতাংশ।
যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের (এনএইচএস) ওয়েবসাইট অনুসারে, ধূমপান পুরুষাঙ্গের ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। পুরুষাঙ্গ পরিষ্কার রাখতে অগ্রভাগের চামড়া (পুরুষাঙ্গ আচ্ছাদিত ত্বক) যদি টানতে সমস্যা হয় (ফিমোসিস), তাহলে পুরুষাঙ্গের ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।
গবেষকেরা বলেছেন, ইংল্যান্ডে পুরুষাঙ্গের ক্যানসারে আক্রান্তের হার বেড়েছে। ১৯৭৯ থেকে ২০০৯ সালে প্রতি ১ লাখ পুরুষের মধ্যে ১ দশমিক ১ জন থেকে বেড়ে ১ দশমিক ৩ জনে দাঁড়িয়েছে। জার্মানিতে ৫০ শতাংশ বেড়েছে। দেশটিতে ১৯৬১ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে প্রতি ১ লাখ পুরুষের মধ্যে ১ দশমিক ২ জন থেকে বেড়ে ১ দশমিক ৮ জনে দাঁড়িয়েছে।